ঝিনাইগাতীতে পাহাড়ী ঢলে ৯ কোটি টাকার চাল পানিতে
আপডেটঃ 9:51 am | October 12, 2017
শেরপুর প্রতিনিধি ॥ ‘নাম লেইখ্যা কি করবেন বাপু, আড়াইকুড় জমিতে বোরো ধান লাগাইছিলাম। পাহাড়ী ঢলে প্রায় সব ধান নষ্ট হইয়া গেছিল তারপরেও কিছু খোরাকি ধান পাইছিলাম। কিন্তু এবারের ঢলে সব ধান নষ্ট হইয়া গ্যাছে। অহন আর আমগরে কোন উপায় নাই। সামনের দিনগুলা ক্যামনে চলবো তা নিয়া চিন্তার শ্যাষ নাই।’
এই কথাগুলো অনেক আক্ষেপ করে এ প্রতিবেদককে বলছিলেন শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার হাতিবান্দা ইউনিয়নের ঘাগড়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের কৃষক মো. সেকান্দর আলী। জানা গেছে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর অতি বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে এ উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের প্রায় ২৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে প্লাবিত গ্রামগুলোর আবাদকৃত আমন ধান নিমজ্জিত ও পুকুরের চাষের মাছ ভেসে যায়।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলায় ১৪ হাজার ৬শ’ ৭৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার ৫শ’ হেক্টর রোপা আমন ধান বন্যায় তলিয়ে যায়। তবে সম্পূর্ণ ভাবে বিনষ্ট হয়েছে ১ হাজার ১০ হেক্টর জমির ধান। এ পরিমাণ জমিতে ২ হাজার ৬শ’ ২১ মে.টন চাউল উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল।
যা ৩৪টাকা কেজি দরে ৮ কোটি ৯১ লাখ ১৪ হাজার টাকা মূল্যের চাউলের ক্ষতি সাধিত হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আজিজুর রহমান বলেন, আকষ্মিক এ বন্যায় উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের প্রায় ১২কিলোমিটার কাঁচারাস্তা বিধ্বস্ত হওয়ার পাশাপাশি ৩ হাজার ঘরবাড়ী বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম বলেন, ১২৩ একর জমির ৩৫০টি পুকুরের প্রায় কোটি টাকার মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। ফলে মৎস্যচাষীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল আওয়াল বলেন, চলতি বন্যায় উপজেলার ৫হাজার চাষী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে।